স্বাস্থ্য সচেতনতা টিপস
খাবারের নানাভাবে ভেজাল মেশানো নতুন কোনও ব্যাপার নয় খাদ্যবস্তুতে রং
মেশানাে চলছে বহুকাল ধরেই যে কোনও খাদ্যবস্তুকে আকর্ষণীয় করতে, চিরকালই
রানা প্রাকৃতিক রং মেশানাে হয়ে থাকে। মানুষের রুচির পরিবর্তনের সঙ্গে
সঙ্গে এল নানা কৃত্রিম, চটকদার মনপসন্দ রং দামে যেগুলাে সস্তা, দেখতে
আকর্ষণীয়, অথচ খেলেই নানা বিপত্তি ভারত সরকারের খাদ্যমন্ত্রক মাত্র ১১টি
রংকে খাদ্যে মেশানাের জন্য অনুমোদন দিয়েছেন, যেগুলাে শরীরের পক্ষে কখনওই
ক্ষতিকর নয় এগুলি হল • ইন্ডিগাে কারমিন • ব্রিলিয়ান্স ব্লএফ সিএফ (নীল রং
করতে) পনিসিয়াউ আর (লাল রঙের জন্য) গ্রিন এফসিএফ ও গ্রিন এস • টারটাজিন
(হলুদ রঙের জন্য) ৩ সানসেট ইয়ালাে (কমলা রঙের জন্য) • অ্যামান্থ •
কারমাইসিন ৩ এরিথ্রোসিন • ফার্স্ট রেড ই প্রতি কেজি খাবারে খুব বেশি হলে
২০০ মিগ্রা পর্যন্ত এদের মেশানাে যাবে এর বেশি মেশালে সেটাও কিন্তু ভেজাল
অথচ এসব অনুমােদিত রঙের বাইরেও নানা রং আকছারই মেশানাে হচ্ছে নানা খাবারে
যার মধ্যে রয়েছে ৩ তুতে বা কপার সালফেট দ্রবণ ৩ ডায়মন্ড গ্রিন • কঙ্গো
রেড • বােড়ামিন বি ৩ অরেঞ্জ টু • কেশনি রং • লেড ব্রোমেট • মেটানিল
ইয়েলাে • অরমিন • আয়রন অক্সাইড ইত্যাদি | বাজারে গেলেই দেখবেন, শাকসজিকে
তুত্রের দ্রবণে চুবিয়ে তরতাজা দেখানাের চেষ্টা চলছে বরফঠান্ডা মাছের
কানকোতে কঙ্গো রেড বা বােড়ামিন বি দিয়ে করা হচ্ছে লাল রং মিষ্টির দোকানে
বোঁদে, মিহিদানা, দরবেশ—সবেতেই মেটানিল ইয়েলাে বা কেশরি রঙের ছড়াছড়ি
চাল, ডাল, তেলেও বিষ: ভেজাল ডাল, জলে এমনকী তেলেও চালে কাঁকর,
অ্যাসবেস্টসের গুড়াে মেশানাে হচ্ছে শুধু তাই নয়, যে কোনও খাদ্যশস্য
ঠিকমতাে রক্ষণাবেক্ষণ না হলে বা দীর্ঘদিন গুদামে ফেলে রাখলে তাতে
অ্যাসপারজিলাস ফ্রেভাস নামে এক ধরনের ছত্রাক জন্মাতে পারে, যার থেকে
আফলাটক্সিন নামে এক ধরনের বিষ নির্গত হয় এর থেকে বাঁচতে গেলে গুদামজাত
শস্যকে এমনভাবে রাখতে হবে, যেন বাতাসের আর্দ্রতা শতকরা
10 এর ওপর না ওঠে
এবং তার মাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে তেলে ঝােলে অম্বলে না
খেলে আমাদের রসনা তৃপ্ত হয় না বিপত্তি তাে সেখানেও তেল নিয়ে প্রায়ই হইচই
হয় ট্রাই ক্রিসাইল ফসফেট মেশানাে ভেজাল রেপসিড তেল খেয়ে বহু বছর আগে
অনেকেই পঙ্গু হয়েছিলেন এছাড়া শিয়ালকাঁটার তেল, তিসির তেল, রেড়ির তেল,
মিনারেল ওয়েল, হােয়াইট অয়েল এসবও আকছার সরষের তেলে মেশানাে হয় বােতলে
ঝাঁঝ আনার জন্য অ্যালাইল থায়ােসায়ানেট নামে একটি রাসায়নিক মেশানাে হয়,
যার থেকে উৎপন্ন হওয়া হাইড্রোসায়নিক গ্যাস মস্তিষ্ক ও স্নায়ুর মারাত্মক
ক্ষতি করে। রাস্তাঘাটে তেলেভাজা দেখে আমরা সংযত রাখতে পারি না কিন্তু একই
তেল বারবার ভাজার ফলে বেনজো পাইরিন কম্পাউন্ড নামক একটি বিষ তৈরি হয় কাজেই
রাস্তাঘাটে তেলেভাজা খাওয়া মানেই বিষ খাওয়া এসব রঙিন এবং ভেজাল খাবার
থেকে আমাদের কী কী অসুবিধা হতে পারে, জেনে নিন আর রসনা • মারাত্মক সব
ক্ষতি: রঙিন খাবারের বিষাক্ত রং আমাদের অন্ত্রনালীতে বিশােষিত হয় সেখান
থেকে যায় লিভারে নানা উৎসেচকের ক্রিয়াকলাপের পর ঘাম-মল-মূত্রের মাধ্যমে
তা দেহ থেকে বার হয়ে যায় দীর্ঘদিন ধরে এইসব বিষাক্ত রং দেহে প্রবেশ করলে,
লিভারের উৎসেচকগুলাের কার্যক্ষমতা কমে যায়। বিষাক্ত রং দেহে জমতে থাকে
তাৎক্ষণিক বিপত্তি বলতে হঠাৎ পেট খারাপ, গা বমি, খিদে কমে যাওয়া, চুলকানি
ইত্যাদি দীর্ঘদিন ডায়মন্ড গ্রিন এবং কেশরি রং মিশ্রিত খাবার খেলে
ক্যান্সার হতে পারে লেড় ব্রোমেট রং পক্ষাঘাতের কারণ হতে পারে রােড়ামিন
বি থেকে মস্তিষ্কে প্রদাহ এবং টিউমার হতে পারে এছাড়া পেশির পক্ষাঘাত,
রক্তাল্পতা, জড়বুদ্ধিসম্পন্ন শিশুর জন্ম, গর্ভপাত, হার্টের অসুখ—কী না হতে
পারে এসব বিষ থেকে।
➖➖➖➖➖➖