আচার্য চাণক্য নীতি
স্ত্রীদের স্বাভাবিক দোষ –
এখানে আচার্য চানক্য স্ত্রিদের স্বভাবের ওপরে টিপ্পণী বলেছেন যে, মিথ্যা কথা বলা, সাহস, ছল কপটতা মূর্খতা, আত্যান্ত লোভ, আপবিত্রতা আর নির্দয়তা- এগুলো
হচ্ছে স্ত্রীদের স্বাভাবিক দোষ ! অর্থাৎ স্ত্রী দের মধ্যে এই পবৃত্তি জাম্নজাত
রুপে থাকে।
ভাগ্যশালীরা জীবনে সুখ প্রাপ্ত করেন —
এখানে অচার্য চানক্য বক্তব্য হচ্ছে – ভোজ্য পদার্থ, ভোজন – শক্তি, রতি শাক্তি, সুন্দরি স্ত্রী, বৈভব এবং দান-শক্তি এই সব সুখ কোন
অল্প তপস্যার ফল হয় না।
অর্থাৎ ভালো খাওয়া দাওয়ার বস্তু প্রাপ্ত হোক আর জীবনের শেষ দিন
পর্যন্ত খাওয়ার আর হজম করার শক্তি বজায় থাকুক স্ত্রী স্বভোগের ইচ্ছা বজায় থাকুক
এবং স্ত্রীয়ের প্রাপ্তি হোক, ধন সস্পতি থাকুক আর দান দেওয়ার অভ্যাসও থাকুক – এই সমস্থ সুখ
কোন ভাগ্যশালী ব্যাক্তিরই প্রাপ্ত হয়। র্পূব জন্মের অখন্ড তপস্যা দ্বরাই এমন
সৌভাগ্যের প্রাপ্তি হয়।
জিবন সুখের মধ্যেই স্বর্গ লুকিয়ে রোয়েছেঃ-
আচার্য চানক্য বক্তব্য – যে ব্যক্তির পুত্র বশীভূত, পত্নি বেদের পথে চলে যে বাক্তি
নিজের বৈভবে সন্তষ্ট – তার কাছে এটাই হছে স্বর্গ!
আচার্যের বক্তব্যের অভিপ্রায় হছে এই যে , যে মানুষ্যের পুত্র আজ্ঞাকারী হয়।
পত্নি ধার্মিক এবং উত্তম চালচলন যুক্ত হয়, সদ গৃহিণী হয় এবং যে ব্যাক্তি
নিজের কাছে যত ধন সম্পত্তি রয়েছে, তাতেই খুশী আর সন্তুষ্ট হয়ে থাকে – এমন ব্যাক্তি এই সাংসারে
স্বর্গের সুখ প্রাপ্ত করে তার কাছে এই পৃথিবীটাই স্বর্গের সমান হয়ে ওঠে!
কারন পুত্রের আজ্ঞাপালক হওয়া, পত্নীর পতিব্রতা হওয়া আর মনুষ্যের
ধনের প্রতি লোভ না রাখা আথবা মনে সন্তষ্টি বজায় রাখয় স্বর্গসুখের সমান হয়।
সার্থকতার মধ্যে রয়েছে সম্বন্ধের সুখঃ
আচার্য চাণক্যের বক্তব্য হচ্ছে এই যে পুত্র হছে সে যে পিতার
ভক্ত হয়, পিতা হচ্ছে
সে যে পোষক হয় মিত্র হচ্ছে সে যে বিশ্বাসের পাত্র হয় আর পত্নী হচ্ছে সে যে
হৃদয়কে আনন্দিত করে তোলে।
দুষ্টু মিত্রদের পরিত্যাগ করুন-
আচার্য চাণক্য এর বক্তব্য হচ্ছে এই যে ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে
তার কাজ পন্ড করে দেওয়া আর ব্যক্তির উপস্থিতি প্রিয় ভাষণ দিতে থাকা মিত্রকে ওপরের
দিকে দুধ রাখা বিষর পাত্রের মতই ত্যাগ করা উচিত! আচার্য চাণক্যের বক্তব্য হচ্ছে এই
যে, দুষ্টু
মিত্রদের ওপরে কখনোই বিশ্বাস করা উচিত নয় আর কোন মিত্রের উপরে সম্পূর্ণরূপে
বিশ্বাস করা উচিত নয়। কুপিত হয়ে উঠলে আপনার গোপন রহস্য
ফাঁস করে দিতে পারে!
মনের ভাব গোপন রাখুনঃ-
আচার্য চাণক্যের বক্তব্য হচ্ছে এই যে, মনে মনে ভেবে রাখা কাজের ব্যাপারে
মুখে প্রকাশ করা উচিত নয়। সেটাকে মন্ত্রের সমান গোপন রেখে
সেটার রক্ষা করা উচিত সেই কাজ সর্বদা গোপন রেখেই করা উচিত ।
পরাধীনতা : আচার্যের বক্তব্য হচ্ছে এই যে মূর্খতা কষ্টকর হয়, যৌবন কষ্টকর হয়, কিন্তু অন্যের ঘরে বাস করা আরো
বেশি কষ্টকর হয়! বস্তুতঃ মূর্খতা নিজের এক কষ্ট হয় আর যৌবন ব্যক্তিকে দুঃখী করে
তোলে ইচ্ছা পূরণ না হলেও দুঃখ হয় আর কোন কাজ পন্ড হয়ে পড়লেও দুঃখ হয়। কিন্তু এইসব দুঃখের থেকেও বড় দুঃখ হচ্ছে অন্যের ঘরে বাস করার দুঃখ!
সাধু পুরুষঃ-
আচার্য চাণক্য বলেছেন যে প্রত্যেক পর্বত চূড়ায় মণি-মাণিক্য
প্রাপ্ত হয় না, প্রত্যেক
হাতির মস্তকে মুন্ডা মনি প্রাপ্ত হয় না, এই সংসারে মানুষ্যের কোনো অভাব
নেই কিন্তু সাধুপুরুষ সব জায়গায় প্রাপ্ত হয় না। এই প্রকার সব বনে চন্দনের বৃক্ষ পাওয়া যায় না।
পুত্রের
প্রতি কর্তব্য:-
আচার্য চাণক্য এখানে পুত্রের সম্বন্ধে উপদেশ দিয়ে বলেছেন যে, বুদ্ধিমান লোকদের এটাই কর্তব্য
হয় যে, তারা
নিজেদের পুত্রকে সর্বদা অনেক প্রকারের সদাচারের শিক্ষা প্রদান করবে। নীতিজ্ঞ
সদাচারী পুত্রই বংশে পূজিত হয়। অর্থাৎ পিতার সবথেকে বড় কর্তব্য হচ্ছে এটা যে, তিনি নিজের পুত্রকে ভালো শিক্ষা
প্রদান করবেন, কারণ
নীতিজ্ঞ আর শীলসম্পূর্ণ পুত্রই বংশে সম্মানপ্রাপ্ত করে! এখানে আচার্য চাণক্য
শিক্ষার ব্যাপারে মাতা পিতার কর্তব্যের উপদেশ দিয়ে বলেছেন যে, সন্তানকে না পড়াতে থাকা
মাতা-পিতা শত্রুর সমান হয়। পড়াশোনা না শেখা ব্যক্তি শিক্ষিত ব্যক্তিদের মাঝে
হাঁসেদের দলে কাকের সমান শোভা পায় না!
আচার্য চাণক্য বাচ্চাদের লালন-পালনে আদর করার ব্যাপারে সেটার
অনুপাত আর সারের ব্যাপারে উপদেশ দিয়ে বলেছেন যে, বেশি আদর দ্বারা অনেক দোষ আর তাড়নে গুণের সৃষ্টি হয়। এজন্য
পুত্রের আর শিষ্যের লালনের নয় -- তাড়নের অবশ্যকতা হয়!
স্বাধ্যায়ঃ-
এখানে আচার্য স্বাধ্যেয়ের গুরুত্ব জানিয়ে বলেছেন যে, ব্যক্তি যে কোন শ্লোক -- সেটার
অর্দ্ধেক -- তারও অর্দ্ধেক অথবা একটা মাত্র অক্ষরের মনন করলেও সেটার সঠিক মননি করা
উচিত। মনন, অধ্যায়ন, দান ইত্যাদি কার্য করে চলে
প্রতিটি দিনকে সার্থক করে তোলা উচিত!
বেশি মোহ-মায়া রাখা বিপজ্জনক হয়ঃ-
এখানে আচার্য চাণক্য জীবনের ত্যাগ করার যোগ্য পরিস্থিতির ওপর
বিচার করে বলেছেন - প্রিয়তমা পত্নী থেকে বিচ্ছেদ, আপন লোকদের দ্বারা অপমানিত হওয়া, ঋণ পরিশোধ করতে না পারা, দুষ্টু রাজার সেবা করা, দরিদ্র আর ধূর্ত লোকেদের সঙ্গ -
এইসব জিনিস অগ্নি ছাড়াই শরীরকে পুড়িয়ে তোলে।
বিনাশের কারণঃ-
আচার্য চাণক্য নীতি-বচনের ক্রমে এখানে এই উপদেশ প্রদান করেছেন
যে, তীব্র বেগে
প্রবাহিত হতে থাকে নদীর কিনারে গজিয়ে ওঠা বৃক্ষ অন্যের ঘরে বাস করতে থাকা স্ত্রী, মন্ত্রী ছাড়া রাজা এই সবকিছু
নষ্ট হয়ে পড়ে।
ব্যক্তির শক্তিঃ-
এখানে আচার্য চাণক্যের বক্তব্য হচ্ছে এইযে বিদ্যাই ব্রাহ্মণের
শক্তি হয়, রাজার
শক্তি তার সেনা হয়, বৈশ্যদের
শক্তি ধন হয় এবং সেবা করা হয় শুদ্রদের শক্তি।
দুনিয়ার রীতিঃ-
আচার্য চাণক্য এখানে প্রাপ্তির পরে বস্তুর উপযোগিতা হ্রাস
পাওয়ার নিয়ম এর উল্লেখ করে বলেছেন এটাই হচ্ছে প্রকৃতির নিয়ম যে পুরুষ নির্ধন
হয়ে পড়লে বেশ্যা সেই পুরুষকে ত্যাগ করে দেয়। প্রজারা শক্তিহীন রাজাকে আর পক্ষী
ফলহীন বৃক্ষ কে ত্যাগ করে দেয়। এই প্রকার ভোজন করে নেওয়ার পরে অতিথি গৃহকর্তার
ভবন ত্যাগ করে চলে যায়।
এখানে আচার্য চাণক্য জগতের রীতি আলোচনা করে বলেছেন যে, দক্ষিণা নিয়ে নেওয়ার পরে
ব্রাহ্মণ যজমান কে ছেড়ে চলে যায়, বিদ্যা প্রাপ্ত করে নেওয়ার পরে
গুরুকে ত্যাগ করে চলে যায়, আর জঙ্গলে
আগুন লাগলে জঙ্গলের পশুরা সেই জঙ্গল ত্যাগ করে চলে যায়!
দুষ্কর্মের থেকে সাবধানে থাকুনঃ-
এখানে আচার্য চাণক্য দুষ্কর্মের পরিণামের প্রতি সতর্ক করে
দিয়ে বলেছেন – দুরাচারী, দুষ্টু
স্বভাবের, বিনা কারণে
অন্যের ক্ষতি করা ব্যক্তি এবং দুষ্টু ব্যক্তির সাথে মিত্রতা রাখা শ্রেষ্ঠ পুরুষও
শীঘ্র নষ্ট হয়ে পড়ে কারণ সংগতির প্রভাব পড়েই।
সামনে সামনে মিত্র তাই শোভা পায়ঃ-
এখানে আচার্য মিত্রতা আর ব্যবহারে সমান ও তার গুরুত্ব
প্রতিপাদিত করে বলেছেন যে, সমান
স্তরের লোকেদের মধ্যে মিত্রতা শোভা পায়! সেবা রাজার শোভা পায়! বৈশ্যদের ব্যবসা
করা শোভা পায়! আর শুভ স্ত্রী ঘরের শোভা পায়!
দোষ কোথায় নেই?
এখানে আচার্য চাণক্যের বক্তব্য হচ্ছে এই যে, দোষ সর্বদা রয়েছে। এ ব্যাপারে
উনি বলেছেন যে, কার বংশে দোষ থাকে না? রোগ কাকে দুঃখী করে না? কে দুঃখকে প্রাপ্ত করেনা আর
নিরন্তর সুখী কোন ব্যক্তি থাকেন? অর্থাৎ কিছু-না-কিছু অভাব তো সব জায়গাতেই রয়েছে আর এটা হচ্ছে
এক কটু সত্য! দুনিয়ায় এমন কোন ব্যক্তি নেই যিনি কখনো অসুস্থ হন নি আর যার কখনো
কোন দুঃখ হয়নি বা যিনি সর্বদা সুখী হয়ে থেকেছেন! তাহলে সংকোচ বা দুঃখ কিসের?
লক্ষণ ধরা আচরণ জানতে পারা যায়ঃ-
আচার্য চাণক্য লক্ষণ থেকে প্রাপ্ত সংকেত গুলোর আলোচনা করে
বলেছেন - আচরণ দ্বারা ব্যাক্তি বংশের পরিচয় পাওয়া যায়। ব্যক্তির বুলি থেকে তার
দেশের ব্যাপারে জানতে পারা যায়। আদর সৎকার দ্বারা প্রেমের আর শরীর দেখে তার
ভোজনের ব্যাপারে জানতে পারা যায়!
ব্যবহার কুশল হনঃ -
এখানে আচার্য ব্যবহারিকতার আলোচনা করে জানিয়েছেন যে কন্যার
বিবাহ কোন ভালো বংশে দেওয়া উচিত, পুত্রকে পড়াশোনায় লাগিয়ে দেওয়া উচিত। মিত্রকে ভালো কোন
কাজে আর শত্রুকে খারাপ কাজে লাগিয়ে দেওয়া উচিত এটাই হচ্ছে ব্যবহারিকতা আর সময়ের
দাবি ও বটে।
দুষ্ট ব্যাক্তিদের এড়িয়ে চলুনঃ-
আচার্য চাণক্য এখানে দুষ্টতার দৃষ্টির সাথে তুলনা করে সেই পক্ষ
উপস্থাপিত করেছেন, যেখানে
দুষ্ট তার প্রভাব যথাসম্ভব কম মাত্রায় পড়ে! ওনার এমনটা মনে হয় যে, দুষ্ট ব্যক্তি আর সাপ - এই দুটোর
মধ্যে সাপ ভালো হয় দুষ্ট ব্যক্তি নয়! কারণ সাপ তো একবারই দংশন করে কিন্তু দুষ্ট
ব্যক্তি প্রতিপদক্ষেপে দংশন করতে থাকে! এজন্য দুষ্টু ব্যাক্তিদের এড়িয়ে চলা উচিত।
কুলিঙ্গের সঙ্গতি করুনঃ-
আচার্য চাণক্য এখানে কুলিনতার বৈশিষ্ট্য জানিয়ে বলেছেন -
কুলীন ব্যক্তির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সঙ্গ প্রদান করেন। তারা বাস্তবে সংগতি
ধর্মের পালন করে চলেন। এজন্য আগের দিনের রাজারা নিজেদের রাজসভায় কুলীন ব্যক্তিদের
সংগ্রহ করে রাখতেন যাতে সময়ে সময়ে তাদের থেকে সৎ পরামর্শ প্রাপ্ত করা যেতে পারে!
এখানে আচার্য ব্যবহারিকতার আলোচনা করে জানিয়েছেন যে কন্যার বিবাহ কোন ভালো বংশে দেওয়া উচিত, পুত্রকে পড়াশোনায় লাগিয়ে দেওয়া উচিত। মিত্রকে ভালো কোন কাজে আর শত্রুকে খারাপ কাজে লাগিয়ে দেওয়া উচিত এটাই হচ্ছে ব্যবহারিকতা আর সময়ের দাবি ও বটে।
দুষ্ট ব্যাক্তিদের এড়িয়ে চলুনঃ-
আচার্য চাণক্য এখানে দুষ্টতার দৃষ্টির সাথে তুলনা করে সেই পক্ষ
উপস্থাপিত করেছেন, যেখানে
দুষ্ট তার প্রভাব যথাসম্ভব কম মাত্রায় পড়ে! ওনার এমনটা মনে হয় যে, দুষ্ট ব্যক্তি আর সাপ - এই দুটোর
মধ্যে সাপ ভালো হয় দুষ্ট ব্যক্তি নয়! কারণ সাপ তো একবারই দংশন করে কিন্তু দুষ্ট
ব্যক্তি প্রতিপদক্ষেপে দংশন করতে থাকে! এজন্য দুষ্টু ব্যাক্তিদের এড়িয়ে চলা উচিত।
কুলিঙ্গের সঙ্গতি করুনঃ-
আচার্য চাণক্য এখানে কুলিনতার বৈশিষ্ট্য জানিয়ে বলেছেন -
কুলীন ব্যক্তির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সঙ্গ প্রদান করেন। তারা বাস্তবে সংগতি
ধর্মের পালন করে চলেন। এজন্য আগের দিনের রাজারা নিজেদের রাজসভায় কুলীন ব্যক্তিদের
সংগ্রহ করে রাখতেন যাতে সময়ে সময়ে তাদের থেকে সৎ পরামর্শ প্রাপ্ত করা যেতে পারে!
চাণক্য নীতি
-------------------