Romantic Bangla Kobita (রোমান্টিক বাংলা কবিতা) | বাংলা কবিতা

Romantic Bangla Kobita (রোমান্টিক বাংলা কবিতা) | বাংলা কবিতা

রোমান্টিক বাংলা কবিতা

সায়াহ্নে
(সৌরেন ভট্টাচার্য)

এখন আর কেউ চিঠি লেখে না আমায়। জীবন-সায়াহ্নে গােধুলির ম্লান মায়ায়
রােদ-পােড়া মাটির সুঘ্রাণ নিতে ফিরে আসে
স্মৃতির মিছিল বিস্মৃতির অতল থেকে।

জীবনের শেষ সীমানার ধারে
শিশিরের গন্ধমাখা সিক্ত ঘাসের আসনে
সাজানাে বকুলফুলের মতাে স্মৃতিরা ভিড় করে। কৈশােরে হারিয়ে-যাওয়া খেলার সাথি,
যৌবনে দৃপ্ত পায়ে একসাথে চলা বন্ধুরা সব এসে দাঁড়ায় মনের কোঠায় একে একে
কিছুই যে হারায়নি, হারিয়ে যায়নি চিরতরে।

আমিও তাে কাউকে লিখি না চিঠি।
তবু কেন মিথ্যে প্রত্যাশায় পথ চেয়ে থাকি স্মৃতির মিছিল গুনে গুনে।
কিন্তু সবই তাে মিথ্যে নয়। এখনও মনে হয়
নিদাঘের তপ্ত পথ বেয়ে পায়ে পায়ে চলতে চলতে মিলে যাব সকলের সাথে,
যারা সবাই আকাশের দিকে দৃঢ় মুঠি তুলে বলেছিল ‘বিভেদ নয়, ঐক্য চাই’, বলেছিল – ‘জয় হােক মানুষের।
➖➖➖➖➖➖

ধোঁয়াশা ফাঁদ
(পরেশ সেন)


সম্পর্কহীন নিরাশার জ্বালায়
নিয়ত বিক্রি হয় জীবনসত্তা,
বৈরাগ্যের মাঝে তবু স্পর্শকাতরতা
বহুরূপীর সাজে ব্যর্থ উদারতা।

কামনার আগুনে নিঃশেষ চেতনা,
মনের গভীরে উদ্দাম লালসা
জীবনের কষ্টিপাথরে চিত্তের শূন্যতা, তবু
বিজয়ীর সাথে আজ বিজয়ের ঐক্যের বারতা।

আকাশে বাতাসে শুধু ধোঁয়াশার ফাঁদ,
গুহার আঁধার ... হিংস্র মাদকতা দিকে দিকে - পদাঘাতে ভাঙো আজ শতাব্দীর লজ্জা ভীরুতা ধারাস্রোতে জাগে যদি জীবন-বিজ্ঞাসা।
➖➖➖➖➖➖➖

হয় না খবর
(তপন মণ্ডল)


যেখানে পথের ধারে নিয়ত অবহেলা
করে খেলা।

ফুটপাথ শুধু গােনে
রাত্রি প্রহর
- কুপি নিভে বস্তিঘরে

অনাহার কড়া নাড়ে
তবুও সংবাদে

হয় না খবর।

ওরাও নানুষ

কিন্তু বাহারি নয় অত

ঝরা সত্য উদাসীন

ভিক্ষে করে যায় দিন দেখি ক্রমাগত।
➖➖➖➖➖➖➖

সাবাশ
(রেবা সেনগুপ্ত)


প্রচারের আলােকে ঝলসানাে মগজে
চিন্তার কাবাবে বাঘ হয় কাগুজে।
মিছরির পানা দিয়ে চটকানাে লেবু
সহজপাচ্য যেন একবাটি সাবু।।

রাম কেন শ্যাম হয়, শ্যাম কেন যদু
প্রচারের জাবনায় খাবি খায় মধু।
আসলে নকলে আর ভেদাভেদ নাইরে!
ঘর বার একাক্কার রূপ থৈ থৈ রে।।

আলােচনা আলাপে বচসার কীর্তন,
শােন ওই রামা হৈ, রাম সীতা লক্ষণ
সবই যেন মনে হয় তুরুপের তাস,
চাল নেই চুলাে নেই হীরকের চাষ।

বিজ্ঞাপনের টবে স্বপ্নের মহীরুহ
বনসাই হয়ে যায়, ভেঙে দিয়ে সব মােহ।
প্রচারের ডঙ্কায় মন হল ভোতা
ভাবনার অলিন্দে বসে এক তােতা।

প্রগতির ক্যানভাসে যত ছবি আঁকা
তালেগােলে হরিবােল হয়ে যায় ফাকা।
সত্যকে চাপা দেয় মিথ্যার মিথ।
যখন যেমন চাই ভনে তার গীত
➖➖➖➖➖➖

বিছাতু সংসার
(রণজিৎকুমার সরকার)


পেটে অন্ন গেলে, অঙ্গে পােশাক জুটলে,
যৌবনের বনে ফুল ফুটলে,
মনে লাগে প্রজাপতি রঙ,
আমার এ পুরাতন খাপটাতে
পুষে রেখেছি যৌবনটাকে
শেষ বেলাতেও ধরেনি তেমন জং।
বিছাতু সংসারে নানা জ্বালা।
মনটা কেঁদে বলে পালা পালা।
সামলাই ফুলগাছের কাছে দাঁড়াই
জ্বালা ভুলে যাই ফুলে ফুলে উড়ে উড়ে
প্রজাপতির পরাগমিলন প্রেম দেখে।
মন ভালাে হয় কবিসভার কবিদের
রসের বাক্যের স্বাদ চেখে।

নাক জ্বলে আগুন পৃথিবীর গন্ধক পােড়া গন্ধে, নাইজেরিয়ায় ও ভূস্বর্গে মানুষের রক্ত ঝরে ছন্দে, লাশের নালিশ সব মিশে যায় ঠাণ্ডা হাওয়ায়;
জন্ম নিক একদল নেভাতে দ্বেষানল - আমি দুর্বল একথা ভাবি বসে নির্জন দাওয়ায়।
➖➖➖➖➖➖➖

আজও অপরাহত
(অমল কর)

মরণ পেরিয়ে জেগে উঠতে সরু ডিগডিগে শরীরেও বেথেলহামের পথের মতাে নির্মম ক্ৰশবুকে হাঁটছি পরিক্রমায়

অসম লড়াই-এ রিং-এ যুঝছি
একহাতে নীতি সংহতি সংযম শৃঙ্খলা
অন্যহাতে প্রতিবাদ পরিত্রাণের আদর্শ
দুই মুষ্টিতে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস পুরে
প্রবল ছােবল দিচ্ছে প্রতিপক্ষ জহ্লআদ
অবিরাম শানানাে আক্রমণ রুখছি

পাটোয়ারির কাছে আত্মমর্যাদা না-বেচে
নিশ্চিত হারের মুখেও পালটা জবাব দিচ্ছি
রিং-এ টিকে আছি আজও এখনও অপরাহত
➖➖➖➖➖➖➖

আহ্বান 
(সােমা মজুমদার)

মানুষ কাঁদছে, বড়াে অসহায়,
চলাে, মানুষের পাশে দাঁড়াই।।

নবীন-প্রাণের দ্বারে প্রবীণের এ আহ্বান
মুখ ফিরিয়ে থেকো না আর,
ঘরে থাকার সময় নয় এটা।
শােননা সমবেত স্বর
গণতন্ত্র, মানবতা, মনুষত্বের বিরুদ্ধে,
প্রতিক্রিয়ার শক্তির জোটকে ভাঙো।
মানুষের ঐক্যের আন্দোলনে সামিল হও,
অবক্ষয়ী সমাজের বদল আনো,
শেষ হােক মানবীর নিত্য অপমান।
চলো সমাজ নিয়ে যাই।
- অন্ধকার থেকে আলােয়। নবীন কণ্ঠ মিলুক প্রবীণের সাথে, উঠুক মুক্তির গান, সাম্যের গান।
➖➖➖➖➖➖➖

ーーーーーーবাংলা কবিতাーーーーーー

أحدث أقدم