বাংলা কবিতাঃ-
প্রতিবাদের পান্ডুলিপি
মৃণাল দত্ত
এ মেয়ে পর্বত শীর্যে উঠতে চায়নি
এ মেয়ে সমুদ্রতল থেকে মুক্তো আনতে চায়নি
এ মেয়ে চেয়েছে এক সরল স্বাধীন জীবন। কে জানতাে। নিরহংকারী এই মেয়ের হৃদয়গভীরে লৌহকঠিন প্রাণ।
- এ মেয়ে টলিয়ে দিয়েছে স্বৈরাচারীর পরােয়ানা
- এ মেয়ে হিজাবের তল থেকে
- গড়েছে তুমুল প্রতিরােধ। প্রত্যয়ী স্বরে
- উচ্চারণ করেছে সে, তালিবানরা মেয়েদের শক্তিকে ভয় পায়
- শিক্ষা যে শক্তি দেয় ওরা তাকেও ভয় পায়।
- এ মেয়ে জেনে গেছে শিক্ষা আনে চেতনা,
হৃৎপিন্ডে দেয় বিশুদ্ধ অক্সিজেন
খলিল তাই বুঝি এ মেয়ে প্রতিরােধে দুর্বার
সকল সন্ত্রাসকে কুটি হেনে এ মেয়ে আজ
বিশ্ব নারীর প্রতিবাদের ভাষা ।
ওরা ফতােয়া দেয়, তুমি মেয়ে পর্দানসিন থাকো
বােরখায় ঢাকো তােমার শরীর
ঘরকন্না সামলাও।
পড়ালেখা পুরুষের, শুধুই পুরুষের
মৌচাকে পড়েছে ঢিল, অচলায়তনে ফাটল
চৌদ্দ পনেরাের একরত্তি মেয়ে ফুঁসে উঠেছে
বুঝে গেছে অধিকার কেড়ে নিতে হয়, তাই,
সে আজ প্রগতির মুখ - সংগ্রামী স্ফুলিঙ্গ
কে না জানে স্ফুলিঙ্গ থেকে দাবানল
দাবানল থেকে বিদ্রোহ বিপ্লব
মেয়েবেলার দূরত্ব সময়ে এই মেয়ে আজ
শিক্ষর অঙ্গনে
শতফুল বিকশিত করে। বিদ্রোহিনী
এই মেয়ের নাম মালালা ইউসুফজাই।।
এ মেয়ে পর্বত শীর্যে উঠতে চায়নি
এ মেয়ে সমুদ্রতল থেকে মুক্তো আনতে চায়নি
এ মেয়ে চেয়েছে এক সরল স্বাধীন জীবন। কে জানতাে। নিরহংকারী এই মেয়ের হৃদয়গভীরে লৌহকঠিন প্রাণ।
- এ মেয়ে টলিয়ে দিয়েছে স্বৈরাচারীর পরােয়ানা
- এ মেয়ে হিজাবের তল থেকে
- গড়েছে তুমুল প্রতিরােধ। প্রত্যয়ী স্বরে
- উচ্চারণ করেছে সে, তালিবানরা মেয়েদের শক্তিকে ভয় পায়
- শিক্ষা যে শক্তি দেয় ওরা তাকেও ভয় পায়।
- এ মেয়ে জেনে গেছে শিক্ষা আনে চেতনা,
হৃৎপিন্ডে দেয় বিশুদ্ধ অক্সিজেন
খলিল তাই বুঝি এ মেয়ে প্রতিরােধে দুর্বার
সকল সন্ত্রাসকে কুটি হেনে এ মেয়ে আজ
বিশ্ব নারীর প্রতিবাদের ভাষা ।
ওরা ফতােয়া দেয়, তুমি মেয়ে পর্দানসিন থাকো
বােরখায় ঢাকো তােমার শরীর
ঘরকন্না সামলাও।
পড়ালেখা পুরুষের, শুধুই পুরুষের
মৌচাকে পড়েছে ঢিল, অচলায়তনে ফাটল
চৌদ্দ পনেরাের একরত্তি মেয়ে ফুঁসে উঠেছে
বুঝে গেছে অধিকার কেড়ে নিতে হয়, তাই,
সে আজ প্রগতির মুখ - সংগ্রামী স্ফুলিঙ্গ
কে না জানে স্ফুলিঙ্গ থেকে দাবানল
দাবানল থেকে বিদ্রোহ বিপ্লব
মেয়েবেলার দূরত্ব সময়ে এই মেয়ে আজ
শিক্ষর অঙ্গনে
শতফুল বিকশিত করে। বিদ্রোহিনী
এই মেয়ের নাম মালালা ইউসুফজাই।।
➖➖➖➖➖➖➖
আত্মনেপদী ভঙ্গির এই ছিটমহল
তাপস রায়
কারা কী করছে! শীত ডেকে আনে সূর্য
কোন জোটে গেলে
হাওয়ার ওপারে আমাকে করবে পূর্ণ
চিনে নিতে হবে
সে কি কম কিছু! তােমরা বলছাে সব টু টু গােটা বাংলাটা শূন্য।
দান ফেলে রেখে
ওই যে আমার দিকে তাকিয়ে থেকেছে লক্ষ্মী
কী যে খুশি লাগে সুইং বুঝেছে জনগণ
হাজার ওয়াটে বিদেশের ধন
ভাসিয়ে দিয়েছে মিডিয়া
আর বাকিটুকু বুলেটের মতাে বিপিএল
সােশ্যাল সাইটে শাড়ি ঠিক রাখি আমি ব্যাঙ্গমী পক্ষী।
➖➖➖➖➖➖➖
পাল্টা মারের দিন
(দীপেন রায়)
কেউ একভাবে থাকতে পারে না
নদীও অত সরল জলরেখা-সীমানা মানে না। সকালের আকাশের রং পালটে হয় দুপুর।
আবার বিকেল
ভাঙতে ভাঙতে সােজা দাঁড়িয়ে ওঠে এক-এক দিন আকাশ
মনের শিরদাঁড়া সামলে বুক পেতে দিই বজ্রপাতের আগে।
কার শরীরে গন্ধ খুলে কোথায় কে ছড়াবে আর ভেবে মরবে সমাজ।
এমন ভুল নিশানায় কত ছুটেছি ঘাম ঝরিয়ে
অবাক হয়ে মরি দিনের আলােয়
স্পষ্টরেখা অস্পষ্ট হয়ে মুছে যাবার দিন।
বলে গেল আগুন থাকতে সেঁকে নিও হাত
অন্তত মুখােমুখি দাঁড়াবার সময়টুকু দেখিও নিমজ্জনের আগে,
ভেবাে, ... পারলে, তুমিও পারো
একটু ঘুরে দাঁড়াতে
পালটা মারের দিন!
কেউ একভাবে থাকতে পারে না
নদীও অত সরল জলরেখা-সীমানা মানে না। সকালের আকাশের রং পালটে হয় দুপুর।
আবার বিকেল
ভাঙতে ভাঙতে সােজা দাঁড়িয়ে ওঠে এক-এক দিন আকাশ
মনের শিরদাঁড়া সামলে বুক পেতে দিই বজ্রপাতের আগে।
কার শরীরে গন্ধ খুলে কোথায় কে ছড়াবে আর ভেবে মরবে সমাজ।
এমন ভুল নিশানায় কত ছুটেছি ঘাম ঝরিয়ে
অবাক হয়ে মরি দিনের আলােয়
স্পষ্টরেখা অস্পষ্ট হয়ে মুছে যাবার দিন।
বলে গেল আগুন থাকতে সেঁকে নিও হাত
অন্তত মুখােমুখি দাঁড়াবার সময়টুকু দেখিও নিমজ্জনের আগে,
ভেবাে, ... পারলে, তুমিও পারো
একটু ঘুরে দাঁড়াতে
পালটা মারের দিন!
➖➖➖➖➖➖➖➖➖
দ্বান্দ্বিক সংঘাত
নরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত
সভিল রােজ ঘাম ফেলে ঘরে ফেরে
সারাদিন কঠিন লড়াই
ঝুপড়িতে জীবনযাপন।
লাঞ্ছিতাকে নিয়ে জীবনটাই। ...
বন্যা-খরা – কখনও উচ্ছেদ
ভাঙচুর - এভাবে তাে বাঁচা ..
ভারতের একশাে কোটির
এ-মাটিতে মৃত্যু কিংবা সাজা।
চারিদিকে মানুষের কত
বৈষম্যের কীর্ণ ইতিহাস |
কত যে অভাব অনটন ...
তবু রােজ বাঁচার নিঃশ্বাস।
রােজ ঘাম ফেলে ঘরে ফেরে
বিধ্বস্ত জীবন মাড়ে-ভাতে ...
রাতে চিরাগের ক্ষীণ আলাে
রক্ত ঝরে দ্বান্দ্বিক সংঘাতে।
নরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত
সভিল রােজ ঘাম ফেলে ঘরে ফেরে
সারাদিন কঠিন লড়াই
ঝুপড়িতে জীবনযাপন।
লাঞ্ছিতাকে নিয়ে জীবনটাই। ...
বন্যা-খরা – কখনও উচ্ছেদ
ভাঙচুর - এভাবে তাে বাঁচা ..
ভারতের একশাে কোটির
এ-মাটিতে মৃত্যু কিংবা সাজা।
চারিদিকে মানুষের কত
বৈষম্যের কীর্ণ ইতিহাস |
কত যে অভাব অনটন ...
তবু রােজ বাঁচার নিঃশ্বাস।
রােজ ঘাম ফেলে ঘরে ফেরে
বিধ্বস্ত জীবন মাড়ে-ভাতে ...
রাতে চিরাগের ক্ষীণ আলাে
রক্ত ঝরে দ্বান্দ্বিক সংঘাতে।
➖➖➖➖➖➖➖
অভিস্পা
(তরুণ আচার্য)
ভালােবাসার অন্তহীন অনুপ্রাসে
অতলান্ত নীল সমুদ্রের বুকে মুখ রেখে
আমি কথা দিয়েছি
তার উত্তাল বর্ণালি ঢেউ-এ দৃঢ় সন্তরণের
হব আমি অভিযাত্রী বেলাভূমি স্পর্শসুখ কামনায়,
ঘরে ঘরে মানুষের হৃদয় কন্দরে
বুনে দেব অভীস্তিত স্বপ্নবীজ।
আমি কথা দিয়েছি আগুনকে
দাবানলের মতাে ছড়িয়ে যাব
এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে,
পুরােনাে যা কিছু আবর্জনা জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই হয়ে মিশে রব মা মাটির বুকে
যে মাটিতে জন্ম নেবে আলাের শিশুরা।
ঘন কালাে শ্রাবণী মেঘকে
আমি দিয়েছি এ কথা -
তার অবিশ্রান্ত বর্ষণ বুকে বয়ে
ঝঞ্ঝাক্ষুব্ধ ঘূর্ণির মতাে সপাট ঔদ্ধত্যে
ভাসিয়ে সুতীব্র স্রোতে সমাজের সব ধুলাে বালি, নিকোনাে উঠান জুড়ে
এঁকে দেব হৃদয়ের রক্তরাগে
নব সমাজের প্রিয় নব আলিম্পন।।
আমি কথা দিয়েছি ফুলেদের
অজানা অরণ্যজাত অচেনা সে ফুল
নীলাভ রােদুরসিক্ত বসন্তবাতাস এনে
ছড়িয়ে দেব তার পরাগ
আকালে আকালে মাঠে রৌদ্র জ্যোৎস্নায়
জীবন সংগ্রামে যারা অনুদিন রক্ত জমা দেয়
সেইসব সর্বহারা মন থেকে মনে
প্রাণ থেকে প্রাণে।
আমি কথা দিয়েছি সমুদ্র, আগুন
মেঘ এবং ফুলেদের,
আমার লাল নীল ভালােবাসাকে
ছুঁড়ে ফেলে অন্ধকারের আবর্তে
ক্রান্তিলগ্নের সূর্য সাধনা মন্ত্রে
নতুন তূণে অমােঘ অস্ত্র ধরে
বিশ্বাসের রথচক্র ঘুরিয়ে নেব চির চেতনের আবর্তে, বিদ্যুজুলা চেতনার প্রস্ফুট আঘাতে
এনে দেব ঘরে ঘরে প্রত্যয়ের অবােধ
অপেত অঘ্রাণের নবান্ন উৎসব
(তরুণ আচার্য)
ভালােবাসার অন্তহীন অনুপ্রাসে
অতলান্ত নীল সমুদ্রের বুকে মুখ রেখে
আমি কথা দিয়েছি
তার উত্তাল বর্ণালি ঢেউ-এ দৃঢ় সন্তরণের
হব আমি অভিযাত্রী বেলাভূমি স্পর্শসুখ কামনায়,
ঘরে ঘরে মানুষের হৃদয় কন্দরে
বুনে দেব অভীস্তিত স্বপ্নবীজ।
আমি কথা দিয়েছি আগুনকে
দাবানলের মতাে ছড়িয়ে যাব
এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে,
পুরােনাে যা কিছু আবর্জনা জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই হয়ে মিশে রব মা মাটির বুকে
যে মাটিতে জন্ম নেবে আলাের শিশুরা।
ঘন কালাে শ্রাবণী মেঘকে
আমি দিয়েছি এ কথা -
তার অবিশ্রান্ত বর্ষণ বুকে বয়ে
ঝঞ্ঝাক্ষুব্ধ ঘূর্ণির মতাে সপাট ঔদ্ধত্যে
ভাসিয়ে সুতীব্র স্রোতে সমাজের সব ধুলাে বালি, নিকোনাে উঠান জুড়ে
এঁকে দেব হৃদয়ের রক্তরাগে
নব সমাজের প্রিয় নব আলিম্পন।।
আমি কথা দিয়েছি ফুলেদের
অজানা অরণ্যজাত অচেনা সে ফুল
নীলাভ রােদুরসিক্ত বসন্তবাতাস এনে
ছড়িয়ে দেব তার পরাগ
আকালে আকালে মাঠে রৌদ্র জ্যোৎস্নায়
জীবন সংগ্রামে যারা অনুদিন রক্ত জমা দেয়
সেইসব সর্বহারা মন থেকে মনে
প্রাণ থেকে প্রাণে।
আমি কথা দিয়েছি সমুদ্র, আগুন
মেঘ এবং ফুলেদের,
আমার লাল নীল ভালােবাসাকে
ছুঁড়ে ফেলে অন্ধকারের আবর্তে
ক্রান্তিলগ্নের সূর্য সাধনা মন্ত্রে
নতুন তূণে অমােঘ অস্ত্র ধরে
বিশ্বাসের রথচক্র ঘুরিয়ে নেব চির চেতনের আবর্তে, বিদ্যুজুলা চেতনার প্রস্ফুট আঘাতে
এনে দেব ঘরে ঘরে প্রত্যয়ের অবােধ
অপেত অঘ্রাণের নবান্ন উৎসব
➖➖➖➖➖➖➖
আমি একা নই, অন্য কেউ
(নরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত)
আমিএকা নই হৃদয় গভীরে অন্য কেউ কথা বলে। ধুকপুক হৃৎপিণ্ড নিয়ে বেঁচে থাকে।
আমাকে জাগায় ভোরের চেতনা আনে --
শিশুর মতন জেগে উঠি – গান শুনি।
বুকের গভীরে একা নই, অন্য কেউ –
তার মুখােমুখি হই
আমি সাত-পাঁচে থাকা গেরস্ত মানুষ – ফিরে যাই-- তার কাছে। পৃথিবীতে এর চেয়ে আর কোনাে
জীবনের কথা নিয়ে বুকের ভিতরে বসে আছে --
অন্য কেউ। শুনে ঘাতের নিঃশব্দে
পদসঞ্চার – প্রান্তিক মানুষের আর্তনাদ
হয়তাে মুষ্ট্যাঘাতে সে দেয়াল ভাঙতে চায়
আমি একা নই, বুকের গভীরে অন্য কেউ
দেখে সে, অন্তহীন অন্ধকারে ক্ষুধার্ত মানুষ
চিরায়ত সুন্দরের পরিণতি ..
নিজের অর্জিত দুঃখদের ঢেকে রাখে।
আমি একা নই – আমাকে কাঁদায়, আমাকে হাসায় বুকের গভীরে অন্য কেউ।
(নরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত)
আমিএকা নই হৃদয় গভীরে অন্য কেউ কথা বলে। ধুকপুক হৃৎপিণ্ড নিয়ে বেঁচে থাকে।
আমাকে জাগায় ভোরের চেতনা আনে --
শিশুর মতন জেগে উঠি – গান শুনি।
বুকের গভীরে একা নই, অন্য কেউ –
তার মুখােমুখি হই
আমি সাত-পাঁচে থাকা গেরস্ত মানুষ – ফিরে যাই-- তার কাছে। পৃথিবীতে এর চেয়ে আর কোনাে
জীবনের কথা নিয়ে বুকের ভিতরে বসে আছে --
অন্য কেউ। শুনে ঘাতের নিঃশব্দে
পদসঞ্চার – প্রান্তিক মানুষের আর্তনাদ
হয়তাে মুষ্ট্যাঘাতে সে দেয়াল ভাঙতে চায়
আমি একা নই, বুকের গভীরে অন্য কেউ
দেখে সে, অন্তহীন অন্ধকারে ক্ষুধার্ত মানুষ
চিরায়ত সুন্দরের পরিণতি ..
নিজের অর্জিত দুঃখদের ঢেকে রাখে।
আমি একা নই – আমাকে কাঁদায়, আমাকে হাসায় বুকের গভীরে অন্য কেউ।
➖➖➖➖➖➖➖
একজন বহিরাগতের জবানবন্দি
(রথীন্দ্রনাথ ভৌমিক)
প্যালেস্তাইনের বাসিন্দা নই আমি
গাজায় থাকি না।
মিসাইল আছড়ে পড়লে তব আমি রক্তাক্ত হই
জান্তব চিৎকারে অভিসম্পাত দিই
মিছিলে হেঁটে একাত্মতা প্রকাশ করি
আক্রান্ত মানুষের।
আমি বহিরাগত, কিন্তু মানুষ ---
যে কোনাে বর্বরতার বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ
প্রতিবাদী মানুষ।
নয় এগারতে আমি ধিক্কার দি
ছয় ডিসেম্বরের আতঙ্ক আমাকে তাড়া করে ফেরে
ইরাকের প্রতিটি গুলি আমার কলজে ভেদ করে যায়
ভিয়েতে আমার ভায়ের মৃত্যুতে আমি ক্রুদ্ধ হই অক্ষাংশ দ্রাঘিমা জুড়ে মিছিল সাজাই।
আর
যাদবপুরের ছাত্ররা তাে আমার সন্তান
আমার বন্ধু, আমার ভাই।
বর্বর আক্রমণের প্রতিবাদে তাদের মিছিলে তাে হাঁটবই;
বুক দিয়ে কে না তার সন্তান বাঁচায়!
আমি বহিরাগত
বেবিচারে বন্দি ছাত্রদের মুক্তির জন্য
আমি গলা ফাটাব।
যে কোনাে নির্যাতনের বিচার চাইব আমি।
ক-জনকে শত্রু চিহ্নিত করবে!
শত্রুর শত্রু মিত্র হয়; বেতনভুক দলদাস নয় --
আমি থাকব বহিরাগতের দলে।
(রথীন্দ্রনাথ ভৌমিক)
প্যালেস্তাইনের বাসিন্দা নই আমি
গাজায় থাকি না।
মিসাইল আছড়ে পড়লে তব আমি রক্তাক্ত হই
জান্তব চিৎকারে অভিসম্পাত দিই
মিছিলে হেঁটে একাত্মতা প্রকাশ করি
আক্রান্ত মানুষের।
আমি বহিরাগত, কিন্তু মানুষ ---
যে কোনাে বর্বরতার বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ
প্রতিবাদী মানুষ।
নয় এগারতে আমি ধিক্কার দি
ছয় ডিসেম্বরের আতঙ্ক আমাকে তাড়া করে ফেরে
ইরাকের প্রতিটি গুলি আমার কলজে ভেদ করে যায়
ভিয়েতে আমার ভায়ের মৃত্যুতে আমি ক্রুদ্ধ হই অক্ষাংশ দ্রাঘিমা জুড়ে মিছিল সাজাই।
আর
যাদবপুরের ছাত্ররা তাে আমার সন্তান
আমার বন্ধু, আমার ভাই।
বর্বর আক্রমণের প্রতিবাদে তাদের মিছিলে তাে হাঁটবই;
বুক দিয়ে কে না তার সন্তান বাঁচায়!
আমি বহিরাগত
বেবিচারে বন্দি ছাত্রদের মুক্তির জন্য
আমি গলা ফাটাব।
যে কোনাে নির্যাতনের বিচার চাইব আমি।
ক-জনকে শত্রু চিহ্নিত করবে!
শত্রুর শত্রু মিত্র হয়; বেতনভুক দলদাস নয় --
আমি থাকব বহিরাগতের দলে।
➖➖➖➖➖➖➖
মহাশয়
(রথীন্দ্রনাথ ভৌমিক)
সয়ে সয়ে যেতে শিখেছি
শিখেছি দেখা না দেখতে
আইপডে কান মুড়েছি --
তবু ক্ষীণ হ্রেষা রক্তে।
পাশ কেটে যাই রাস্তায়
জানি না ও কার লাশ যে!
দেখেও দেখি না ধামসাই
তরুণীকে তিন যণ্ডে।
এই ভেবে নিতি স্তোক
দু-দিনেই নেভে শােক;
হ্রেষাধ্বনিহীন রক্তে
মানি দস্তুর তখতে।
কেউ যেন বলে মহাক্লীব
শুনছি, শান্তি মহাশিব।
(রথীন্দ্রনাথ ভৌমিক)
সয়ে সয়ে যেতে শিখেছি
শিখেছি দেখা না দেখতে
আইপডে কান মুড়েছি --
তবু ক্ষীণ হ্রেষা রক্তে।
পাশ কেটে যাই রাস্তায়
জানি না ও কার লাশ যে!
দেখেও দেখি না ধামসাই
তরুণীকে তিন যণ্ডে।
এই ভেবে নিতি স্তোক
দু-দিনেই নেভে শােক;
হ্রেষাধ্বনিহীন রক্তে
মানি দস্তুর তখতে।
কেউ যেন বলে মহাক্লীব
শুনছি, শান্তি মহাশিব।
➖➖➖➖➖➖➖
আলাে
(অমল চক্রবর্তী)
যদি তুমি মনে করাে
বাঁচবে না আর
বাঁচা যাবে না
তবে মরাে
হলুদ পাতারা ঝরার আগেই
ভিতরে ভিতরে
সবুজ পাতারা ডাকে
তুমি যদি আজও বুঝতে না পারাে তাকে তবে জায়গাটা ছাড়াে
বেঁচে থেকে যদি থেকে যেতে পারাে, থাকো নয়তাে মরাে
চাঁদ ওঠেনি, ফুল ফোটেনি – এমন রাতে
অন্ধকারে তুমিই সঙ্গী তােমার পথে
যদি তুমি মনে করাে
ডাক দিতে পারো
কেউ কেউ যদি এলাে তবে ভালাে
নইলে তুমিই একা – বাঁচার ভিতরে থাকা
ভিতরে ভিতরে সবার সঙ্গে তােমার দ্যাখা
ফুটতে ফুটতে একটু আলাে, তাকেই ধরাে
নইলে মরাে।
(অমল চক্রবর্তী)
যদি তুমি মনে করাে
বাঁচবে না আর
বাঁচা যাবে না
তবে মরাে
হলুদ পাতারা ঝরার আগেই
ভিতরে ভিতরে
সবুজ পাতারা ডাকে
তুমি যদি আজও বুঝতে না পারাে তাকে তবে জায়গাটা ছাড়াে
বেঁচে থেকে যদি থেকে যেতে পারাে, থাকো নয়তাে মরাে
চাঁদ ওঠেনি, ফুল ফোটেনি – এমন রাতে
অন্ধকারে তুমিই সঙ্গী তােমার পথে
যদি তুমি মনে করাে
ডাক দিতে পারো
কেউ কেউ যদি এলাে তবে ভালাে
নইলে তুমিই একা – বাঁচার ভিতরে থাকা
ভিতরে ভিতরে সবার সঙ্গে তােমার দ্যাখা
ফুটতে ফুটতে একটু আলাে, তাকেই ধরাে
নইলে মরাে।
➖➖➖➖➖➖➖
অরণ্যবাহ
(আলােক সরকার)
(আলােক সরকার)
দুটো চোখ আর দুটো চোখ
স্তব্ধতা আত্মগ্রাসী হয়েছে।
যে রিরি শব্দ শুনেছ
তা শূন্যতার কণ্ঠ।
এত বড় নিষ্ঠুরতা!
আজ একাকার হয়েছে। অরণ্যবহ্নি -
দহন নেই জ্যোতি নেই।
একটা অন্ধগলি আর একটা অন্ধগলির দিকে প্রশ্নাতুর।
পাথর অবজ্ঞা। অন্ধগলির শেষপ্রান্তে
অশ্বত্থ গাছ। হনন করার প্রচেষ্টা হল না,
আজও হল না। বস্তুহীন দৃশ্যহীন রাজপথ
আর ধূমল ইঙ্গিত – পথের
নিষ্ঠুর ধর্মাচরণ।
ওই ব্যবধান হচ্ছে দুটো চোখ। ওই ।
পৃথক হচ্ছে দুটো চোখ। আজ কোনাে
ক্ষমা নেই। দৃষ্টি বহির্ভূত।
আর সেই অরণ্যবহ্নি।
➖➖➖➖➖➖➖
বন্য বিড়ালের মতাে
(নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী)
মাথাটা কাজ করে, কিন্তু হাতখানা করে না। করবে বা কী করে?
আসলে সবই তাে কলকজার ব্যাপার।
নাট বল্ট ইস্কুরুপ ইত্যাদি প্রভৃতি
যন্ত্রের একটাও
বিগড়ে যদি গিয়ে থাকে আচমকা কোথাও,
তা হলে শরীরে।
সর্বাত্মক না হলেও অন্তত আংশিক ধর্মঘট হতে পারে, হয়।
যেমন আমার ক্ষেত্রে সম্প্রতি হয়েছে।
মাথাটা সক্রিয়, কিন্তু হাতখানা হঠাৎ বিগড়ে গেছে বন্য বিড়ালের
বিসপ্তিবিহীন ধর্মঘটের মতন।
মস্তিষ্ক নির্দেশ দিচ্ছে, থেমে গেলে কেন,
লেখাে, লিখে যাও ।
কিন্তু তার ধর্মঘট ভেঙে যায় পাছে,
হাতখানা কিছুতে কারও হুকুম মানছে না, নির্বিকার সে এখনও কলম নামিয়ে বসে আছে।
(নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী)
মাথাটা কাজ করে, কিন্তু হাতখানা করে না। করবে বা কী করে?
আসলে সবই তাে কলকজার ব্যাপার।
নাট বল্ট ইস্কুরুপ ইত্যাদি প্রভৃতি
যন্ত্রের একটাও
বিগড়ে যদি গিয়ে থাকে আচমকা কোথাও,
তা হলে শরীরে।
সর্বাত্মক না হলেও অন্তত আংশিক ধর্মঘট হতে পারে, হয়।
যেমন আমার ক্ষেত্রে সম্প্রতি হয়েছে।
মাথাটা সক্রিয়, কিন্তু হাতখানা হঠাৎ বিগড়ে গেছে বন্য বিড়ালের
বিসপ্তিবিহীন ধর্মঘটের মতন।
মস্তিষ্ক নির্দেশ দিচ্ছে, থেমে গেলে কেন,
লেখাে, লিখে যাও ।
কিন্তু তার ধর্মঘট ভেঙে যায় পাছে,
হাতখানা কিছুতে কারও হুকুম মানছে না, নির্বিকার সে এখনও কলম নামিয়ে বসে আছে।
➖➖➖➖➖➖➖