List of Foods That Lower Blood Sugar | সুগার কমাতে নিরামিষ খাবার


List of Foods That Lower Blood Sugar (নিরামিষ খাবার) | সুগার কমাতে নিরামিষ খাবার

আমাদের দেশে স্বাস্থ্য সমস্যায় সুগার অর্থাৎ ডায়াবেটিস মহামারীর আকার ধারণ করেছে | স্বাস্থ্যসম্মত খাবারদাবার ও লাইফস্টাইল আমরা কর্মরত জীবনে প্রায় হারিয়ে ফেলেছি অসংযত জীবনযাপনের মধ্যে অস্বাস্থ্যকর খাবারদাবার যেমন অতিরিক্ত ফাস্টফুড ও জাঙ্কফুডের প্রাচুর্য, পরিশ্রমের অভাব, মানসিক উদ্বেগ, টেনশন ও স্ট্রেস, খাদ্যে পুষ্টিকর উপাদানের অভাব ইত্যাদি আমাদের  নিয়মিত সঙ্গী আমাদের খাদ্যতালিকায় নিরামিষ খাবারে পুষ্টিকর উপাদানগুলি সঠিকভাবে বিচার বিশ্লেষণ করে যথাযথ সময়ে সেবন করলে এই রােগ থেকে দূরে থাকা সম্ভব নিরামিষ খাদ্যতালিকায় প্রকৃতির প্রচুর সবুজ ও রঙিন শাকসজি ও ফল ইত্যাদির গুণগত মান বিশ্লেষণ করে সেবন করলে এই রােগ থেকে নিষ্কৃতি সম্ভব। 
তবে মনে রাখতে হবে খাদ্যতালিকার সঙ্গে সঙ্গে সঠিকl পরিমাণে পরিশ্রমও অবশ্যই জরুরি মানসিক চাপ কমিয়ে রাতে সুন্দর ঘুম ও মনকে হাসিখুশি রাখতে হবে বিভিন্ন প্রকার শাকসজি ও ফলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন, মিনারেলস, ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদানগুলাে এই রােগকে সহজেই দূরে রাখে | আমাদের খাদ্যতালিকায় কিছু কিছু শাকসজি, শস্য ও ফলকে বেছে নিতে হবে যাদের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুবই কম যা আমাদের রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে যে সমস্ত খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স স্কোর ৫৫ বা তার কম, তাকে আমরা লাে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ফুড বলে থাকি | এই রােগে আমাদের খাদ্যতালিকা সবসময় ব্যালান্সড ডায়েট রাখতে হবে তাই খাবারে বেশি পরিমাণে ফাইবার থাকবে। শ্বেতসারহীন শাকসজি ও শস্য, যথেষ্ট পরিমাণে প্রােটিন ও উপকারী ফ্যাট থাকবে, ভিটামিন, মিনারেলস ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হবে বাজারে যে সমস্ত মিষ্টি স্বাদযুক্ত বেভারেজ 
যেমন জুস, সােডা, কোল্ডড্রিংকস ইত্যাদি পাওয়া যায়, এদের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি থাকে তাই এদের খাদ্যতালিকা থেকে বর্জন করতে হবে সাধারণ শাকসজি ও ফলে উপস্থিত কিছু কিছু অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান আমাদের ফ্রি র্যাডিকেল ড্যামেজের হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে ও অন্যান্য রোগের হাত থেকে শরীরকে সুরক্ষিত রাখে কিছু কিছু অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যেমন বিটা ক্যারোটিন, লুটিন, লাইকোপিন, ভিটামিন এ, সি এবং ই, সেলেনিয়াম, জিঙ্ক, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি রঙিন শাকসবজি ও ফলে বেশি পরিমাণে থাকে আমাদের মনে রাখতে হবে, রান্না করার সময় অতিরিক্ত তাপমাত্রা কিংবা রান্না করার বিভিন্ন পদ্ধতি এই সমস্ত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কি নষ্ট করে দেয় ডায়াবেটিস রােগীদের হার্টের রােগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে তাই কম ফ্যাট জাতীয় খাবার খেতে হবে আমাদের খাবারে সাধারণত দুই ধরনের ফ্যাট থাকে তার মধ্যে স্যাচুরেটেড ফ্যাট কোলেস্টেরল বাড়ায় বা হার্টের পক্ষে ক্ষতিকর এর ফলে সুগার রােগীর হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হবার আশঙ্কা বেশি থাকে মধ্যে রয়েছে বাটার, ক্রিম, মাংস, কেক, চকোলেট ইত্যাদি আবার আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট সহজে কোলেস্টেরল বাড়তে দেয় না এটি দুই ধরনের হয় স্যাচুরেটেড ফ্যাটসমৃদ্ধ খাবারগুলির যেমন মােনাে আনস্যাচুরেটেড ও পলি আনস্যাচুরেটেড মােনাে আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে—অলিভ অয়েল, রেপসিড অয়েল, বাদাম তেল, পিনাট তেল, কাজু ইত্যাদিতে। পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। যেমন সূর্যমুখী তেল, সয়াবিন তেল, কর্ন তেল ইত্যাদিতে বিভিন্ন প্রকার শাকসবজি ও ফলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস থাকার জন্য সুগার রােগীর পক্ষে উপকারী, ফাইবার ও প্রােটিন সমৃদ্ধ খাবার হল প্রকৃত সুগার রোগীর ডায়েট ফাইবার জাতীয় খাবার আমাদের পেট ভরা রেখে খিদে কমায়, ধীরে ধীরে হজম হয় ও ধীরে ধীরে অন্ত্রে শােষিত হয় যার ফলে রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণ থাকে। এটি কোলেস্টেরল কমায়, ব্লাড প্রেশার  নিয়ন্ত্রণ করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে। মূল ও কন্দ জাতীয় সজিতে শ্বেতসার বেশি পরিমাণে থাকায় এদের খুব কম পরিমাণে খেতে হবে। এদের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি থাকে।

পরিমাণমতাে খাওয়া যেতে পারে এদেহ বান্না বা সেদ্ধ করলে স্তাচ ভেঙে গিয়ে সক শর্করায় রূপান্তরিত হয়ে যায় যা সহজে রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়ায় বীটজাতীয় সি জি ব্লাড প্রেসার কমায়, রক্ত সংবহন ত্ত্ব ও হার্টের পক্ষে খুবই উপকারী। আবার ৫৯ রােগ প্রতিরােধে সাহায্য করে ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ ফুড যেমন কালো বিনস, পালং, ব্রকোলি, মটর ইত্যাদি এই রােগের পক্ষে ভালাে, সুগার রােগীরা একসঙ্গে বেশি পরিমাণ খাবার না খেয়ে অল্প অল্প পরিমাণে বারবার খেতে পারেন। এতে রক্তে সুগার লেভেল অতিরিক্ত বৃদ্ধি পায় না বিভিন্ন ধরনের সাইট্রাস ফুড অর্থাৎ টক জাতীয় ফল যেমন লেবু, কমলা, আঙুর, আমলকী, বেরী ইত্যাদিতে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ফ্রি র্যাডিকেল ড্যামেজের হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে, যা এই রােগের পক্ষে উপকারী। কিছু কিছু ফলে সুগারের পরিমাণ বেশি থাকলেও এদের পুষ্টিকর উপাদানের প্রাচুর্য থাকায় অল্প পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে শুকনাে ফলে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায়, তাই কাঁচা অবস্থায় এদের খাওয়া যুক্তিযুক্ত আবার মনে রাখতে হবে বাজারের বােতলবন্দি ফলের রস মােটেই উপকারী নয় কারণ এতে মিষ্টি স্বাদ বাড়াতে সুগার মেশানাে থাকে যা রক্তে সুগারের মাত্রা অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। মনে রাখতে হবে যে কোনও তেল উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করার সময় অক্সিডাইজ হয়ে যায় যা রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দেয়, যা হার্টের পক্ষে ক্ষতিকর সুগারের রােগীর যদি সুলত্ব থাকে, তাহলে ওজন কমাতে হবে, এতে লো গ্লাইসেমিক ফুড খেতে হবে ও যথেষ্ট পরিমাণে এক্সারসাইজ বা পরিশ্রম করে ওজন কমাতে হবে। ওজন কমে গেলে ইনসুলিন রেজিট্যান্স কমে যায় ফলে সহজে সুগারের মাত্রায় সাম্য অবস্থায় আসে। তাছাড়া ওজন কমালে রক্তচাপ, জয়েন্ট পেন কোলেস্টেরল কমে যায়, স্ট্রেস কমে গিয়ে ঘুম ভালাে হয়। এই সমস্ত আলােচনায় আমরা প্রথমে জানব..

গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কী?

হ্যাঁ, গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বলতে বুঝব আমার খাবার কত সময় ধরে হজম হয় ও পরে অস্ত্র শােষিত হয় যে সমস্ত খাবার ধীরে ধীরে হজম হয় ও পেটকে ভরা রেখে ক্ষুধা কমায় তাকে আমরা লাে গ্লাইসেমিক ফুড বলে থাকি। এটা সহজে আমাদের রক্তে সুগারের মাত্রা অতিরিক্ত বাড়ায় না এই ধরনের খাবারকে ডায়াবেটিস রােগে স্বাস্থ্যসম্মত হিসাবে বিবেচনা করে থাকি। আবার যে সমস্ত খাবার তাড়াতাড়ি হজম হয়ে গিয়ে রক্তে সুগারের মাত্রা অতিরিক্ত বাড়িয়ে দেয় (প্রধানত শ্বেতসার জাতীয় খাবার), তাকে আমরা হাই গ্লাইসেমিক ফুড বলে থাকি। নীচে কিছু লাে এবং হাই গ্লাইসেমিক ফুডকে তালিকাভুক্ত করা হল— 

লাে গ্লাইসেমিক ফুড (এদের ইনডেক্স ৫০ বা এর কম)

এই সমস্ত ফুডে ক্যালােরির পরিমাণ কম থাকে। ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে। সাধারণত শ্বেতসারহীন শাকসজি ও কয়েক ধরনের ফল, খােসা সমেত আটা, বিভিন্ন প্রকার ডাল, বিনস, মটর ইত্যাদি, ওট, বালি, পালং, বাঁধাকপি, ফুলকপি, লেটুস, ক্যাপসিকাম, টম্যাটো, সােয়াবিন, কাঁচা গাজর, রাঙাআলু, কর্ন ব্রকোলি, পেঁয়াজ, কুমড়াে বীজ, পাতাজাতীয় বিভিন্ন প্রকার শাক, আমন্ড, ওয়ালনাট, আপেল, চেরি, বিভিন্ন প্রকার টক জাতীয় ফল, বেরী (স্ট্রবেরী, ব্লুবেরী ইত্যাদি), ভার্জিন কোকোনাট অয়েল, অলিভ অয়েল, ফ্যাট ছাড়া দুধ, দই, ঘােল ইত্যাদি 

হাই গ্লাইসেমিক ফুড (ইনডেক্স ৭০ বা এর বেশি)

এগুলাে সাধারণত শ্বেতসার যুক্ত হয়, ক্যালােরির পরিমাণ বেশি থাকে। প্রধানত মূল ও কন্দ জাতীয় সজি সাদা চাল, আলু, নুডলস, সাদা পাউরুটি, মুড়ি, খই, চিড়া, চালের পাস্তা, কুমড়াে, কর্নফ্লেক্স, পপকর্ন, তরমুজ, আনারস, আম, কেক, অতিরিক্ত পাকা ফল, ফলের রস, আলুর চিপস, সােডা জাতীয় পানীয়, ফাস্টফুড, জাঙ্কফুড, বাজারে প্রাপ্ত বােতলবন্দি জুস বা পানীয়, গুড়, চিনি, শুকনাে ফল, খেজুর, পিৎজা, আইসক্রিম, জ্যাম, জেলি ইত্যাদি খেতে হলে কম পরিমাণে খেতে হবে ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া উচিত। তাই এই সমস্ত খাবার খেতে হলে ক্যালােরির পরিমাণ সামঞ্জস্য রেখে ফুড চার্ট করা উচিত। নিচে কিছু শাকসজি, মশলা ও ফলের গুণাগুণ বলা হল যা ডায়াবেটিস রােগীর পক্ষে ফলদায়ক 
• লেগুম জাতীয়  

ডাল, সজি—বিল্স ইত্যাদি প্রােটিন ও দ্রবণীয় ফাইবার থাকে, পেট ভরা রাখে খিদে কমিয়ে দেয়। ফলে রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। লেগুম জাতীয় প্রেশার কোলেস্টেরল ও হার্টের পক্ষে ভালাে। বিনসে উপস্থিত এক ধরনের যৌগ থাকে, ইনসুলিন তৈরিতে সাহায্য করে, উপস্থিত অ্যামাইলােজ পেট ভরা রেখে ধীরে ধীরে হজম 
পালং শাক: এতে লুটিন নামে এক যৌগ থাকে, সুগার রােগীর চোখ ভালাে রাখে। গবেষণায় জানা গিয়েছে, এতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে, যা হার্টের ভালাে কাপ রান্না করা পালং শাকে প্রায় ৮৪০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম থাকে যা প্রায় ২টি কলার সমান এতে ক্যালােরির খুবই কম, এতে ফোলেট ভিটামিন ‘সি’ অনেকটাই থাকে। এতে উপস্থিত বিটাক্যারােটিন র্যাডিকালের ক্ষতি থেকে শরীরকে রক্ষা করে। তাছাড়া দীর্ঘদিন রােগভােগের বার্ধক্য রােধ করে। 
ব্রকোলি, বাঁধাকপি, ফুলকপি :

এই সমস্ত সজিতে এক ধরনের যৌগ সালফোরাফেন থাকে আমাদের কোষ থেকে গ্লুকোজ তৈরিতে বাধা দেয়। অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। রক্ত সংবহন তন্ত্র তথা হার্ট নিউরােপ্যাথি কমাতে সাহায্য করে। ব্রকোলিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ আছে, হাই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বিটাক্যারােটিন থাকে, ত্বক, চোখ, হাড়কে ভালাে রাখে। সুগার রােগীর একপ্রকার সুপার ফুড। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এক ধরনের যৌগ লিয়ানস থাকে, সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করে। এতে আলফা লিনােলিক অ্যাসিড থাকে ওমেগা ও ফ্যাটি অ্যাসিডে রূপান্তরিত হয়। কোলেস্টেরল কমায়, ধমনির কাঠিন্য। ভাব (অ্যাথেরােস্ক্রেরােসিস) কমিয়ে হার্ট ডিজিজ ও স্ট্রোক প্রতিহত করে।

লাল পেঁয়াজ: ব্রিটিশ অব নিউট্রিশন-এ গবেষণায় জানা গিয়েছে, এতে এক ধরনের ফাইবার থাকে যা সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য তাছাড়া এতে উপস্থিত সালফার জাতীয় যৌগ আছে কোলেস্টেরল কমায়। ধমনির কাঠিন্য ভাব কমিয়ে ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে
সাহায্য করে। এতে উপকারী ফ্ল্যাভােনয়ে থাকে যা এই রোগে উপকারী।

ওট: এতে দানাশস্যের চেয়ে অধিক পরিমাণে ফাইবার থাকে যা সুগীর, খারাপ। কোলেস্টেরল ও হৃদরোগ প্রতিহত করে এতে উপস্থিত বিটা গ্লুকেন, ফাইবার ব্লাড সুগার, প্রেশার কমায়। এটি খিদে কমিয়ে ফ্যাট ঝরাতে সাহায্য করে।
গাজর: এটি পুষ্টিকর উপাদানে ভরপুর ভিটামিন ‘সি’, 'ডি, ই', 'কে এবং উন্নতমানের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বিটা ক্যারােটিন থাকে। এই রােগে কাঁচা গাজর উপকারী, রান্না করে খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এটি ডায়াবেটিক রেটিনােপ্যাথি প্রতিরােধে খুবই উপকারী
 টম্যাটো, কমলালেবু: 
এদের মধ্যে উন্নত মানের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট লাইকোপিন থাকে যা খুবই উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’ থাকে। কাঁচা টম্যাটোর চেয়ে রান্না করে খেলে এতে উপস্থিত লাইকোপিন আমাদের অন্ত্রে তাড়াতাড়ি শােষিত হয়। টমেটো পেস্ট ও স্যস-এ উপস্থিত লাইকোপিন কাঁচা টমেটোর চেয়ে প্রায় ৭ গুণ বেশি থাকে।
উচ্ছে: গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ১টি বড় সাইজের উচ্ছে প্রতিদিন খেলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের সুগার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রতিদিন ২-১ কাপ উচ্ছের রস সকালে খালি পেটে খেলে উপকারে আসে। এটি ইনসুলিন নিঃসরণে সাহায্য করে। 
নাট: চিনাবাদাম, আমন্ড, কাজু ইত্যাদি এর অন্তর্ভুক্ত। এতে আন স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ওমেগা ও ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইবার, ভিটামিন ‘ই’ ও এল আরজিনিন যৌগ থাকে যা ধমনির দেওয়ালকে সংকোচন ও প্রসারণে সাহায্য করে। ধমনির মধ্যে রক্ত তঞ্চনে বাধা দেয়।
 লাল ক্যাপসিকাম : এতে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট লাইকোপিন, বিটা ক্যারােটিন ও ভিটামিন ‘সি’ যথেষ্ট মাত্রায় থাকায় এই রােগে সবই উপকারী। এছাড়া হার্টের পক্ষেও ভালাে। 
সজনে শাক: এটি প্রাকৃতিক পুষ্টিকর উপাদানে ভরপুর এক সজি এতে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ভিটামিন ও মিনারেল থাকে। এতে উপস্থিত ফাইবার রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। 
সয়াবিন: প্রােটিন, ভিটামিন ও মিনারেলস-এ ভরপুর থাকে সয়াবিন এতে আলফা লিনোলেনিক অ্যাসিড খারাপ কোলেস্টেরল কমায়। সুগার রোগীর প্রােটিনের ঘাটতি এটি পূরণ করে।
মেথি: এটি গ্লুকোজ টলারেন্সকে ইমপ্রুভ করে রক্তে সুগার কমাতে সাহায্য করে। এতে উপস্থিত কয়েক ধরনের ফাইবার অস্ত্র সুগার শােষণে বাধা দেয় ও খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে | 
কারিপাতা: এতে উপস্থিত কয়েক ধরনের যৌগ সুগার কমাতে সাহায্য করে। এটি কোলেস্টেরল ও ওবেসিটি কমায়  
আদা: এতে উপস্থিত কয়েক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে আনে। এটি কোলেস্টেরল কমায় ও ওজন কমাতে সাহায্য করে। 
হলুদ: এতে খুবই উপকারী এক যৌগ কারকুমিন ডায়াবেটিস প্রতিরােধে ও সুগার কমাতে সাহায্য করে। এটি ধমনির কাঠিন্য ভাব কমায় রক্তবাহী ধমনির মধ্যে প্রদাহ কমায়। হার্টকে সুরক্ষিত রাখে ও ওজন ঝরাতে সাহায্য করে। এটি সুগার রােগীর কিডনি সংক্রান্ত সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। 
নিমপাতা: আমরা সজির মধ্যে নিমপাতাকেও অন্তর্ভুক্ত করে থাকি। এটি ইনসুলিন রিসেপটর সেনসিটিভিটিকে উন্নত করে ধমনির সঙ্কোচন ও প্রসারণ ক্ষমতা বাড়িয়ে রক্ত চলাচলে সাহায্য করে ও ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণ করে। 
ডালচিনি: আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিকাল নিউট্রিশন গবেষণায় জানা গিয়েছে, ১ চামচ ভর্তি ডালচিনির পাউডার ফাস্টিং ব্লাড সুগার কমাতে সাহায্য করে। এতে উপস্থিত উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন অ্যান্টি অক্সিডেন্ট পলিফেনলস থাকে, যা ইনসুলিন সেনসিটিভিটিকে উন্নত করে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ২ চামচ পাউডার খেলে ভালাে কাজ দেয় এটি খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। 
আমলকী: প্রকৃতির এক চমৎকৃত ফল যা ভিটামিন সি দ্বারা ভরপুর এটি প্যাংক্ৰিয়াস-এর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রতিদিন ৬০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি রক্তে সুগারের মাত্রাকে উন্নত করে।
আঙুর: এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ ও দ্রবণীয় ফাইবার থাকে এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুবই কম এটি ডায়াবেটিস রােগীর একটি সুপার ফুড এটি খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে ভালা কোলেস্টেরলকে বাড়ায়। এতে উপস্থিত এক ধরনের ফ্ল্যাভােনয়েড ইনসুলিন তৈরিতে সাহায্য করে। এর বীজে উন্নতমানের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হার্টকে ভালাে রাখে।
আপেল: এতে দ্রবণীয় ফাইবার ভিটামিন ‘সি’ ও অন্যান্য অ্যান্টি-অক্সিজেন থাকে। এতে উপস্থিত পেকটিন শরীর টক্সিনকে বের করে দেয়। এটি হার্ট, তন চোখকে ভালাে রাখে। 
বেরী (যেমন স্ট্রবেরী, ব্লবেরী, ব্ল্যাক বেরী ইত্যাদি) এটি সুগার রােগীর এক সুপার ফুড এই ফলের গ্লাইসেমিক ইনডে খুবই কম এতে উপকারী অ্যান্টি-অক্সিতে বিটা ক্যারােটিন, ভিটামিন ‘সি’ ‘কে’ ফোলেট সায়ানিন (অ্যান্থোসায়ানিন) ইনসুলিন নিঃসরণ করে রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণ করে। এই ফলে উপস্থিত পলিফেনলস শরীরে ফ্যাট ঝরাতে সাহায্য করে। এটি হার্টের পক্ষে খুবই উপকারী। 
জাম: এর পাতা, ফল ও বীজ সুগারের পক্ষে খুবই উপকারী। এটি রক্তে ও প্রসাবে সুগার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এর বীজে এক ধরনের গ্লাইকোসাইড থাকে, যা শ্বেতসারকে ভেঙে সুগারে রূপান্তরিত করতে বাধা দেয় এতে উপস্থিত অ্যান্থােসায়ানিন ও এলাজিক অ্যাসিড এই রােগের পক্ষে ভালাে।
পেয়ারা: লাইকোপিন, ভিটামিন সি ও ফাইবার থাকায় পেয়ারা খাওয়া সুগারের পক্ষে খুবই ভালাে। এর পাতায় রস বা পাউডার ডায়াবেটিস প্রতিরােধে সাহায্য করে।
গ্রিন টি: এতে উপস্থিত এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পলিফেন রক্তে সুগার কমাতে সাহায্য করে। এটি বিপাক ক্রিয়া বৃদ্ধি করে ফ্যাট ঝরাতে সাহায্য করে। _ ডায়াবেটিস রােগে শুধু খাদ্যতালিকার দিকে নজর দিলে হবে না, সঙ্গে এক্সারসাইজ বা পরিশ্রম অত্যন্ত জরুরি যা শরীরে ক্যালােরি নাশ করে আবার অ্যাংজাইটি, ডিপ্রেশন ও স্ট্রেস শরীরের পক্ষে খুবই অপকারী। স্ট্রেস বাড়লে রক্তে সুগারের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। অডি অতিরিক্ত স্ট্রেস হলে আমাদের শরীরে স্ট্রেস হর্মোন যথা এপিনেফ্রিন, কর্টিজল ইত্যাদি নিঃসরণ বৃদ্ধি পায় যা রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই বিভিন্ন যােগাসন পরিশ্রম ও মনােমুগ্ধকর গান, দৃশ্য ও অন্যান্য আনন্দদায়ক অনুভূতি দ্বারা স্ট্রেস কমাতে হবে। সারাদিনে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করুন। ফাস্টফুড, জাঙ্কফুড, ধুমপান ও অতিরিক্ত মদ্যপান এড়িয়ে চলুন। আরও অনেক প্রকার শাকসবজি আছে যা সুগার রােগীর পক্ষে উপকারী। তবে মনে রাখতে হবে আমাদের শরীরে ক্যালোরি বিচার করে খাদ্য সেবন করা উচিত।
➖➖➖➖➖➖


Previous Post Next Post